বাংলাদেশ
নৌবাহিনী বাংলাদেশ চার সামরিক বাহিনীর
মধ্যে একটি । নেীবাহিনী বাংলাদেশের
নৌ সীমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত। দেশীয়
জাহাজ নির্মাণ শিল্প বাংলার অনেক পুরানো ঐতিহ্য। চতুর্দশ
শতকে ঐতিহাসিক পর্যটক ইবনে বতুতা বাংলায় এসে সোনারগাঁয়ে নির্মিত কাঠের জাহাজে ভ্রমণ করেছিলেন। ইউরোপীয়
পর্যটক সিজার ফ্রেডরিকের মতে পঞ্চদশ শতকে চট্টগ্রাম ছিল সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণের মূল কেন্দ্র। সপ্তদশ
শতকে তুরস্কের সুলতানের নৌবহর নির্মিত হয় চট্টগ্রামে। দেশীয়
জাহাজ নির্মাণ শিল্পের বিকাশ বাংলায় শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠনের ভিত্তি তৈরি করে।
ভারতীয়
উপমহাদেশে মুঘল শাসনের সময় মুঘল নৌবাহিনীর অধিকাংশ জাহাজ বাংলায় তৈরি হয়। মুঘলদের
বাংলা দখলের পর জলদস্যুতা রুখতে তারা একটি শক্তিশালি নৌবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। সে
লক্ষ্যে তারা ভোলা, সন্দ্বীপ, নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল, খিজিরপুর, ঢাকা ইত্যাদি কৌশলগত জায়গায় নৌঘাঁটি স্থাপন করে। কিন্তু
মুঘলরা সমুদ্রে দুর্বল হওয়ায় তারা বার্মিজ জলদস্যুদের থামাতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীকালে
মুঘলরা শায়েস্তা খানকে জলদস্যু দমনের দায়িত্ব প্রদান করে। দায়িত্ব
নেওয়ার এক বছরের মাথায় শায়েস্তা খান প্রায় ৩০০ নৌকা ও জাহাজ সংগ্রহ
করেন। পরে
তিনি বার্মিজ জলদস্যুদের দমন করেন এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং আরাকান বার্মিজদের থেকে ছিনিয়ে আনেন।
ব্রিটিশ শাসনামলে তারা ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ নৌঘাঁটি স্থাপন করতে থাকে। তবে তাদের মূল মনোযোগ ছিল পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে কেন্দ্রীভূত। বাংলাসহ উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে কোন নৌ-অবকাঠামো নির্মাণের কোন উদ্যোগ ব্রিটিশরা গ্রহণ করে নি।১৮০৫ সালের বিখ্যাত ট্রাফালগার যুদ্ধে ব্রিটিশ নৌবাহিনী বাংলায় তৈরি জাহাজ ব্যবহার করে। ১৮১৮ সালে জার্মান নৌবাহিনীর কাঠ-নির্মিত ফ্রিগেট ডাচল্যান্ড চট্টগ্রামে তৈরি হয়।
১৯৯৩
সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাতিসংঘ মিশনে যুক্ত হয়।১৯৯৭
সালে প্রথমবারের মত স্বতন্ত্র নৌবাহিনী ইউনিট মোতায়েন করা হয় প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের পর ইরাক-কুয়েত সীমান্তের জলপথের নিরাপত্তায়। পরবর্তীতে
২০০৫ সালে সুদানে একটি ফোর্স রিভারাইন ইউনিট (এফআরইউ) নামক নদীভিত্তিক টহল দল পাঠানো হয়।এছাড়াও
সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন মিশনেও নৌসদস্যরা অংশ নিয়ে থাকেন। ২০১০
সাল থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী লেবাননে জাতিসংঘ মিশন ইউনিফিল এর আওতায় ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে আসছে। বর্তমানে
এই মিশনে একটি ক্যাসল ক্লাস ক্ষেপণাস্ত্রবাহী কর্ভেট মোতায়েন রয়েছে।
বাংলাদেশ
নৌবাহিনী নিয়মিতভাবে অন্যান্য নৌবাহিনীর সাথে মহড়ায় অংশগ্রহণ করে থাকে যা মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন ও যুদ্ধ সক্ষমতা
বাড়াতে সাহায্য করে। ১৯৯২
সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনী
এক্সারসাইজ সী ব্যাট নামক বার্ষিক সমুদ্র মহড়ায় অংশ নিত। ২০০৯
সাল থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর
বিশেষ বাহিনী এক্সারসাইজ টাইগার শার্ক নামক মহড়ায় অংশ নিয়ে আসছে। ২০১১
সাল থেকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর
মধ্যে কোঅপারেশন অ্যাফ্লোট রেডিনেস অ্যান্ড ট্রেনিং (কারাত) নামক বাৎসরিক সামুদ্রিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।ভারতীয়
নৌবাহিনী আয়োজিত দ্বিবার্ষিক মহড়া মিলান এও নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ নিয়মিতভাবে অংশ নিয়ে থাকে। ২০০৯
সাল থেকে আরব সাগরে পাকিস্তান নৌবাহিনী আয়োজিত দ্বিবার্ষিক মহড়া আমান এ বাংলাদেশ নৌবাহিনী
ফ্রিগেট নিয়ে অংশগ্রহণ করে আসছে। নৌবাহিনী
কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত সংকট মোকাবিলা অনুশীলন মহড়া এক্সারসাইজ ফেরোশাস ফ্যালকন এও অংশ নিয়ে থাকে।বানৌজা
আবু বকর ২০১৪ সালে চীনের শ্যানডং প্রদেশের কুইংদাওতে অনুষ্ঠিত ওয়েস্ট প্যাসিফিক নেভাল সিম্পোজিয়াম (ডব্লিউপিএনএস) এ অংশগ্রহণ করে।এছাড়া
নৌবাহিনী ২০১৫ সাল থেকে মালেশিয়ায় অনুষ্ঠিত বহুজাতিক প্রদর্শনী মহড়া লাংকাউই ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অ্যান্ড অ্যারোস্পেস এক্সিবিশন (লিমা) এ অংশগ্রহণ করে
থাকে। ২০১৭
সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ভারত মহাসাগরীয় ফোরামের ব্যানারে বহুজাতিক সমুদ্র মহড়া ইওএনএস মাল্টিলেটারাল মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এক্সারসাইজ (আইএমএমএসআরইএক্স) আয়োজন করে। এটি
ছিল নৌবাহিনীর আয়োজিত প্রথম বহুজাতিক মহড়া।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নিয়োগ এর বিস্তরিত
প্রতিষ্ঠানের নাম:বাংলাদেশ নৌবাহিনী
সংক্ষিপ্ত নাম:BD Navy
আবেদন শুরুর তারিখ:16 আগস্ট, 2022
আবেদনের
শেষ তারিখ:30 সেপ্টেম্বর, 2022
অবস্থা:চলমান
ওয়েব
লিংক:
https://joinnavy.navy.mil.bd/